নারী


নারী একটা শব্দ। নারী একটা নাম।
এই নামেতেই একজন বিপরীত লিঙ্গের মানুষকে
অর্ধেক করে দেওয়া হয়েছে তার শক্তি, তার মেধা,
তার বুদ্ধি, তার কর্মক্ষমতা।
এই সমাজে যখন নারী জন্মায় তখনই তার জন্য প্রাপ্য অর্ধেক ডিম, সবার শেষে ভাত খাওয়া।
যখন বিকেলবেল খেলাধুলা করবে তখনও তার জন্য প্রাপ্য থাকে অর্ধেক বিকেল।

এই নারী শব্দের সাথে জড়িয়ে আছে  বলে তাকে বসতে হচ্ছে পাবলিকের বাসের নির্দিষ্ট এক স্থানে।
তা না হলে সে নিরাপদ নয়, তা নাহলে তাকে হেনস্তার শিকার হতে হবে।

এই নারী শব্দটার সাথে জড়িয়ে আছে বলে তাকে থাকতে হয় বিভিন্ন সতর্কতায়। একজন নারী ঘুম থেকে উঠে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘরের বাহিরে থাকলে তাকে এক বিশ্বযুদ্ধে  অংশগ্রহণ করতে হয়।
হাজারো গোলাবারুদ চোখে নিয়ে তাকিয়ে থাকে
মানুষ নামের কিছু টর্পেডো। এক টর্পেডো দিয়ে প্রতিপক্ষের পুরো এলাকা ধ্বংস করে দেওয়ার মতো সেই চোখের যোগ্যতা। হাজারো চোখকে পাশ কাটিয়ে তারা জীবিত আছে।

তাপ্পর চোখ বেয়ে মুখ। মুখের কুৎসিত শব্দে যে গ্রেনেড বিস্ফরিত হয় তাহাদের আশেপাশে সেই বিস্ফোরণেও চুপ থাকতেই তাদের নাম নারী।
এতসব বিস্ফোরণের শব্দ পাশ কাটিয়ে  তারা জীবিত আছে। এই গ্রেনেডের বিপরীতে কথা বলার সাহস পায় না তারা। কিভাবে করবে বলেন অর্ধেক ডিমে কি আর এত সাহস থাকে?

তাপ্পর আসে আবার মুখ বেয়ে হাত।
এই হাত! এই হাত তাদের হেনস্তা করে বাসে, এই হাত তাদের হেনস্তা করে বৈশাখী মেলায়,এই হাত তাদের হেনস্তা করে বইমেলার ভীড়ে।
এটাকে এক ধরনের টানা কামান এর সাথে তুলনা করতে পারেন। ধরেন এই হাত এম ৪৬ কামান ।
যা প্রতিপক্ষের সীমান্তে পড়লেই একেবারে খেল খতম। এইরকম অনেক হাত পরছে নারীদের উপর ঘরে-বাইরে। তারপরও তারা জীবিত আছে।
তারপরও তারা বলছে না,
" বেচেঁ আছি এই তো বেশ! "
এতসব গোলাবারুদ, টানা কামান, টর্পেডো বিস্ফোরণ তারা পাশ কাটিয়ে তারা জীবিত আছে।
এই নারীরা জীবিত আছে তারা জীবিত থাকার পাশাপাশি আন্দোলন করে গেছেন নারী জাগরণের। বেগম রোকেয়া, সুফিয়া কামাল, জাাহানারা ইমাম, নূরজাহান বেগম কিংবা প্রীতিলতা প্রমুখ মহীয়সী নারীরা নারী মুক্তির যে স্বপ্ন দেখেছিলেন সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হচ্ছে।
দেশে প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, বিরোধীদলীয় নেত্রী, শিক্ষামন্ত্রী সহ নারী।
তারা সাফল্য অর্জন করেছে,  এমন অনেক সাফল্য অর্জন করেছে যা আস্ত ডিম খাওয়া ছেলেরাও করতে পারে নি। এই যে এখনো শিরোপা জিততে পারেনি বাংলাদেশ পুরুষ ক্রিকেট দল। অথচ তাদের পিছনে ফেলে অবিশ্বাস্য এক অর্জন করে দেখিয়েছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। ২০১৮ এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠে দেশবাসীকে এশিয়া কাপের শিরোপা উপহার দিয়েছে বাংলার নারীরা। যা কিনা যেকোনও পর্যায়ের ক্রিকেটে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের এটাই সেরা সাফল্য।
এমন হাজারো সাফল্য অর্জন করেছে বাংলার মেয়েরা।
নারীদের অগ্রগতির জন্য নারীদের'ই সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে।


Comments

Popular posts from this blog

গ্রাফিতি! গ্রাফিতি কি? গ্রাফিতির ইতিহাস কি?

জন্মদিন উৎসব কিভাবে এলো?

বীর পুরুষ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর